নেত্রকোনার মদনে ইজিবাইকচালক কিশোর রিজান মিয়া (১৭) খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এক যুবককে গতকাল রবিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার পাগলা বস্তি থেকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, আটক হওয়া যুবকসহ তিনজন মিলে যাত্রী বেশে রিজানের ইজিবাইকটি ছিনতাই করতে তাকে খুন করে।
আটক হওয়া যুবকের নাম সাগর মিয়া (২৪)। তিনি মদন দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার ছেলে। আর নিহত রিজান মিয়া মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের শাহ আলমের ছেলে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রিজান প্রতিদিনের মতো গত মঙ্গলবার সকালে তার ইজিবাইকটি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। কিন্তু কোথাও না পেয়ে বুধবার রাতে মদন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে তার পরিবার। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয়রা উপজেলার খাগুরিয়া এলাকার পাটক্ষেতে রিজানের অর্ধগলিত লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এরপর ব্যবহৃত ইজিবাইকটি উপজেলার বটতলা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় রিজানের বাবা বাদী হয়ে শুক্রবার সকালে থানায় অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালায়। ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহম্মদের নেতৃত্বে এসআই নন্দন সরকার, এএসআই মশিউর রহমানসহ ডিবি পুলিশের একটি দল শনিবার আটপাড়া সোনাজুর বাজারের একটি ভাঙারির দোকান থেকে রিজানের ইজিবাইকটির ব্যাটারিগুলো জব্দ করে। এ সময় পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে এর সূত্র ধরে রবিবার রাত ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পাগলা বস্তি থেকে ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সাগর মিয়াকে আটক করা হয়।
এসআই ফরিদ আহম্মদ বলেন, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সাগর মিয়া জানিয়েছেন, রিজানের ইজিবাইকটি ছিনতাই করতে তিনিসহ আরো দুজন যাত্রীবেশে ইজিবাইকে বসেন। পরে খাগুরিয়া এলাকায় এসে রাস্তার নিচে পাটক্ষেতে রিজানকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার গলায় একজন দড়ি পেঁচিয়ে দুহাতে ধরে রাখা হয় আর অন্য দুজন বুকে ও শরীরে আঘাত করে পাঁচ মিনিটের মধ্যে রিজানকে হত্যা করা হয়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনায় জড়িত অন্য দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে আমরা তাদের নাম বলছি না।