৬ জুন থেকে ১০ জুন সারা দেশে চলছে ভূমি সেবা সপ্তাহ। আলোাচনা সভা করে দিনটি পালন করা ছাড়াও সেবা গ্রহিতাদের দ্রুত সেবা প্রধান করা এবং সাধারণ জনগণকে বলে দেওয়া সঠিক কাগজপত্র দাখিল করলে সব কাজই স্বচ্ছভাবে করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে ‘নিজের কাজ নিজে করব, দালাল প্রতারক থেকে দূরে থাকবো’-এই রকম শ্লোগান নিয়ে সপ্তাহটি পার করার কথা থাকলেও ময়মনসিংহের নান্দাইলে আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয়নি ভূমি সেবা সপ্তাহ দিনটি।
আজ সোমবার সকালে নান্দাইল উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, সহকারী কমিশনার (ভূমি) করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অফিসে না থাকলেও সার্ভেয়ার বা অন্য কোনো কর্মকর্তা কার্যালয়ে নেই। অফিসের সামনে কোনো মতে ঝুলানো রয়েছে সেবা সপ্তাহের একটি ডিজিটাল ব্যানার। সার্ভেয়ারের কক্ষে যাওয়া বেশ কয়েকজন সেবা গ্রহিতা একজন পিয়নকে ঘিরে ধরে নিজেদের কাজ সর্ম্পকে আলোচনা করছেন। তাছাড়া আগত অনেকেই এদিক সেদিক ঘুরাফেরা করছেন। নিজেদের কাজ নিয়ে আসা সমাধান সর্ম্পকে কারও কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাচ্ছেন না।
কাছেই রয়েছে নান্দাইল সদর ইউনিয়নের ভূমি অফিস। সেখানেও সেবা গ্রহিতারা গিয়ে ফিরে আসছেন। আবার কেউ বা অপেক্ষা করছেন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার (নায়েব) জন্য। উপজেলার ঝালুয়া গ্রাম থেকে এসেছেন খোশেদা খাতুন (৬০) নামে একজন। তিনি বলেন,‘এক বছর ধইর্যা ঘুরতাছি খাজনা দেঅনের লাইগ্যা। কিন্তু কিছুই করতাম পারতামছিনা। খালি কয় অইতো না। কেরে অইতো না তা কয় না।’ এই রকম শরিফুল ইসলাম স্বপন মিয়া নামেও আরেক জন এসেছেন সকাল থেকে। তিনি বলেন, ‘খারিজের সবকিছু জমা দিছি কিন্তু গত ছয়মাস ধইর্যা কেরে অয় না বুঝি না। আমার সাথে এই রকম অনেকেই ঘুরে।’
অফিসের ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, রাজু নামে এক ব্যক্তি আলমারি থেকে কাগজপত্র বাহির করে নাড়াচাড়া করছেন। তিনি কে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি এখানে কাজ করি।’ কী কাজ করেন জানতে চাইলে বলেন, ‘আউটসোর্সিং।’ নায়েব সাহেব কোথায় জানতে চাইলে বলেন, ‘স্যার উপজেলায় গেছেন মিটিংয়ে।’ তখনো বেশ কয়েকজন তার অপেক্ষায় রয়েছেন।
জানা যায়, সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে প্রত্যেক ইউনিয়নে সেবা ক্যাম্প থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঘরে বসে, সহজে, স্বল্প সময়ে নির্ধারিত ফি-তে ভূমি সেবা পাওয়ার বিষয়ে জনগণকে অবহিত করার কথা ছিল। এ ছাড়া সেবা ক্যাম্প থেকে তাৎক্ষণিক ই-নামজারি সেবা ছাড়াও ভূমি উন্নয়ন কর গ্রহণ করা এবং খাস জমি বন্দোবস্ত, রিভিউ মোকদ্দমা ও বিবিধ মোকদ্দমার আবেদন গ্রহণ করে সম্ভাব্য ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা।
এ বিষয়ে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) মো. আব্দুল মোমেন বলেন, ‘যাদের আজ ঘুরতে দেখছেন তাঁদের অনেকেরই কাগজপত্র ঠিক না। কাগজপত্র ঠিক করে আনতে বলা হলেও তাঁরা অযথা ঘুরেন।’ সেবা সপ্তাহ পালন উপলক্ষে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্যার (এসিল্যান্ড) অসুস্থ তাই আমরা জনগণকে লিফলেট দিচ্ছি। (এ সময় টেবিলের ড্রয়ার থেকে বের করে একটি লিফলেট এ প্রতিনিধির হাতে তুলে দেন তিনি)। তাছাড়া আমাদের কাজে কোনো গাফিলতি নাই।’