নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে গরুচোর অপবাদ দিয়ে দুই গরু কারবারিকে মারধর করে তাদের সাথে থাকা ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরে আহত গরু কারবারিরা হলেন- পাশের খালিয়াজুরি উপজেলার লিপসা গ্রামের মৃত শাহাজ উদ্দিনের ছেলে মরম আলী (৪৫) এবং একই ইউনিয়নের বল্লী গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে ফারুক মিয়া (৪৮)। আহতদেরকে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের মান্দারবাড়ি গাঙের হাটি গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার নেতৃত্বে তার লোকজন নিজ বসতঘরে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটায়। এ ব্যাপারে শনিবার রাতে আহত গরু কারবারি মরম আলী বাদী হয়ে সিদ্দিক মিয়াসহ চারজনকে আসামি করে মোহনগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার মান্দারবাড়ি গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছোট-বড় ৫টি গরু বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পাশের চড়েরকান্দা নামক হাওরে ঘাস খাওয়ার জন্য ছেড়ে দিয়ে আসেন। পরে ওইদিন বিকেলে ওই হাওর থেকে সিদ্দিক মিয়া তার গরুগুলো আনতে যান এবং সেখানে তিনি গরু খুঁজে না পেয়ে আশপাশে রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও তিনি তার গরুগুলো পাননি। পরদিন শুক্রবারও তিনিসহ তার লোকজন দিনভর আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের গরুগুলো খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এদিকে ওইদিন সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে পাশের ধর্মপাশা গরুর বাজার থেকে গরু বেচা-কেনা করে মরম আলী ও ফারুক মিয়া নামে ওই দুই গরু কারবারি বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় হারিয়ে যাওয়া গরুর মালিক সিদ্দিক মিয়া ও তার লোকজন ওই দুই গরু কারবারিকে তাদের গরুগুলি চুরি করে নিয়েছে বলে অপবাদ দেন। সিদ্দিক মিয়ার নেতৃত্বে তারা দুই গরু কারবারিকে রাস্তা থেকে ধরে বাড়ি নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করেন এবং তাদের সাথে থাকা নগদ ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। মারধরে ফারুকের বাম পাটি ভেঙে যায় বলেও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। এদিকে ওই দুই গরু কারবারি সিদ্দিক মিয়ার বাড়িতে আটক থাকা অবস্থাতেই হারিয়ে যাওয়া গরুগুলো একই গ্রামের এক ব্যক্তি খুঁজে পেয়ে গরুর মালিক সিদ্দিক মিয়ার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত গরু কারবারি ফারুক মিয়া বলেন, আমরা সততার সাথে ব্যবসা করে সংসার চালিয়ে আসছিলাম। কিন্তু সিদ্দিক মিয়া ও তার লোকজন আমাদেরকে মিথ্যা গরু চুরির অপবাদ দিয়ে তাদের ঘরে আটকে বেধড়ক মারধর করে আমাদের সাথে থাকা নগদ ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।
তিনি আরো বলেন, তারা মারধর করে আমার বাম পায়ের গোড়ালি ভেঙে গেছে। পরে গ্রামের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে সেখান থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করেন। আমরা তাদের বাড়িতে আটক থাকা অবস্থাতেই তাদের হারিয়ে যাওয়া গরুগুলোও বাড়িতে নিয়ে আসে একজন। তবে সিদ্দিক মিয়া ও তার লোকজন আমার ব্যবসার সবটুকু পুঁজি নিয়ে যাওয়াতে আমরা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি বলে তিনি কাঁদতে থাকেন এবং তিনি এখন কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ খান বলেন, এ বিষয়ে শনিবার রাতে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।