সামিয়ানা টানিয়ে মঞ্চ ছাড়াও ২৪টি স্টল দৃশ্যমান ছিল। দুই লাখ ৪৯ হাজার টাকা ব্যয়ে এ অনুষ্টানে আলোচনা সভা ছাড়াও পুরস্কার বিতরণসহ প্রাণিসম্পদের প্রদর্শনী করার কথা দিনব্যাপী। দাওয়াতপত্রে এ নিয়ে অনুষ্ঠান সূচিও ছিল। কিন্তু সকাল ১০টার অনুষ্ঠান শুরু হয় দুপুর ১২টায়। আলোচনা চলে ঘণ্টাখানেক। প্রধান অতিথি চলে যাওয়ার পর খুলে নেওয়া হয় সকল কিছু। প্রদর্শন থেকে বঞ্চিত হলেন আগতরা। এ যেন, ‘যখন শুরু তখনই শেষ’।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে আজ শনিবার প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। চণ্ডীপাশা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় আঙিনায় অনুষ্ঠানটি দিনব্যাপী চলার কথা ছিল। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রায় মধ্যহ্নের আগেই অনুষ্ঠানটি শেষ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে বিতরণ করা আমন্ত্রণপত্রে দেখা যায়, আমন্ত্রিত অতিথিরা সকাল ১০টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে প্রদর্শনীর স্টল প্রদর্শন করবেন। ১০টা ৪০ মিনিটে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার স্বাগত বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা। সকাল ১১টায় অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রস্তুতি কার্যক্রম চলছে। এ সময় কয়েকটি বিদেশি জাতের গরু ও একটি ষাঁড় গরু প্রদর্শনীর স্টলে তোলা হয়। প্রদর্শনীস্থলের কাছাকাছি এক বাসিন্দার কাছ থেকে লম্বা কানওয়ালা কয়েকটি ছাগল আনা হয়।
এ ছাড়া বিদেশি জাতের হাঁস, পাখি, ভেটেরিনারি ওষুধ ও গবাদিপশুর খাবার রাখা হয় একাধিক স্টলে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন সাংসাদ আনোয়ারুল আবেদীন খান, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ, পৌর মেয়র রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া। বিকাল ৪টায় সমাপনী বক্তব্য ও অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে যোগ্য ব্যক্তিকে পুরস্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্টানটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুপুর আড়াইটার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে দেখা যায় খাজা বাবা ডেকোরেটরের কর্মচারীরা মঞ্চ ও স্টল খুলে নিচ্ছেন।
ডেকোরেটর মালিক মো. রাসেল জানান, ৪২ হাজার টাকার কাজ। অনুষ্ঠান শেষ করতে গিয়ে রাত হয়ে গেলেও তার পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু স্টলে কোনো কিছু না থাকায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকদের ফোন করেই সব খুলে নেওয়া হচ্ছে।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করা খামারি ফরিদ মিয়া জানান, তিনি একটি স্টলে ৩২ প্রজাতির প্রাণী প্রদর্শন করেছিলেন। কিন্তু ঘণ্টাখানেক থাকার পর আর প্রদর্শন করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া কোনো যাচাই-বাচাই না করেই কয়েকটি কোয়েল পাখি প্রদর্শন করেছেন এমন খামারিকে প্রথম পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,পাশের উপজেলা ঈশ্বরগঞ্জে অনুষ্ঠান শেষ হয় বিকেল সড়ে ৪টার পর। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে ঈশ্বরগঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু সাদাদ মোহাম্মদ সায়েম। তিনি জানান, দিন ব্যাপী অনুষ্টানের জন্য বরাদ্দ দুই লাখ ৪৯ হাজার টাকা। সাধারণ জনগনকে খামার গড়তে উৎসাহিত করতেই এই আয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মলয় কান্তি মোদকের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ময়মনসিংহ জেলা প্রণিসম্পদ কর্মকর্তা ওয়াহেদুল আলম বলেন, এখানে ফাঁকিবাজি করার কোনো সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবেন।