দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে কলহের জের ধরে শাহানা আক্তার (২৬) নামে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন স্বামী লালন মিয়া (৩৬)।
বুধবার (২ জুন) দুপুরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত লালন মিয়াকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া লালন মিয়া সদর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত আবদুর রহিমের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। এ ছাড়া রাজমিস্ত্রির কাজের সঙ্গেও যুক্ত আছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর আগে লালন মিয়ার সঙ্গে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর এলাকার বাসিন্দা ফুল মিয়ার মেয়ে শাহানা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুজন মেয়ে ও একজন ছেলে রয়েছে। মেয়েদের বয়স নয় ও আড়াই। আর ছেলের বয়স সাত। শাহানা বর্তমানেও নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
গত দুবছর আগে লালন ব্যবসার কথা বলে শাহানাকে তার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে কিছু টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দেন। পরে তিনি সেখান থেকে ২০ হাজার টাকা এনে দেন। এরপর আবারও টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু শাহানা এতে আর রাজি হননি। গত দুমাস আগে লালন শাহানাকে না জানিয়ে ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য বিরোধ চলছিল।
বুধবার ভোরে লালন মিয়া শাহানার বাবা ফুল মিয়াকে মোবাইল ফোনে জানান, শাহানাকে শেষ দেখা দেখতে চাইলে দ্রুত যেন কাঞ্চনপুর চলে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে ফুল মিয়া কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শাহানার শোবার ঘরে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে লালন মিয়া পালিয়ে যান।
পুলিশ অভিযান চালিয়ে লালনকে আটক করে একই সঙ্গে শাহানার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
লালনের শ্বশুর ফুল মিয়া বলেন, ‘আমার নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটারে লালন মেরে ফেলছে। সে শাহানাকে হত্যা করে আমাকে ভোরে ফোন দিয়ে দ্রুত যেতে বলে। আমি বিষয়টি পুলিশকে জানাই। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। এ ঘটনার আমি দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম মাহমুদুল হক বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে দাম্পত্য কলহের জের ধরে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা শাহানাকে তার স্বামী লালন মিয়া শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। ডেড বডিতে এ রকম কিছু সিনট্রমও মিলেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে। এ নিয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’