গতকাল সোমবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।জলাবদ্ধতার কারণে নগরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জলাবদ্ধতার কারণে দেখা দিয়েছে যানজট।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মধ্য ছায়াবীথি এলাকার বাসিন্দা মুজিবুর রহমান বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে এখনই জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। এর জন্য অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ বন্ধ করা এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা জরুরি।
এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর শহরের আশপাশে গতকাল মধ্যরাত থেকে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। আজ মঙ্গলবার সকালে কখনো ভারী, কখনো মাঝারি বৃষ্টি হতে থাকে। অতিবৃষ্টির কারণে গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় থানার সামনে এবং শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের সামনের এলাকা পুরো ডুবে আছে। কোনাবাড়ী, জরুন, চান্দনা চৌরাস্তা, বাসন সড়ক, ভোগড়া, মোগরখাল, মেঘডুবি, আমবাগ, গাছা, ইটাহাটা, রওশন সড়কসহ অর্ধশতাধিক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা ঘর থেকে বাইরে বের হতে পারছেন না। সকাল থেকে ঘরে বন্দী আছেন। এলাকায় ঘরের ভেতরেও পানি ঢুকে পড়েছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারণে কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে। তবে আশা করছি দ্রুত এসব পানি সরে যাবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা রয়েছে। আরও কাজ চলছে।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাসন সড়ক এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে এলাকার প্রায় সব রাস্তায় পানি জমে আছে। বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকেরা হাঁটুপানি মাড়িয়ে কারখানায় যাচ্ছেন।
ভোগরা এলাকায় লাবিব গ্রুপের কারখানার শ্রমিক শ্যামল কুমার বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি উঠানে পানি উঠে গেছে। রান্নাঘরে পানি জমে আছে। সকালে রান্নাবান্না করা যায়নি। হোটেলে খেয়ে এখন কাজে যাচ্ছি।’ কারখানার শ্রমিক নাসরিন আক্তার বলেন, তাঁরা সাধারণত হেঁটে কারখানায় যান। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সড়কগুলোতে পানি জমে থাকায় তাঁদের দুর্ভোগের শেষ নেই আজ।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, গতকাল রাত থেকে টানা বৃষ্টির কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশে জলাবদ্ধতায় যানবাহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। এতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে প্রায় ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট রয়েছে। এ ছাড়া উত্তরা, আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত বিআরটিএর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। জলাবদ্ধতা থাকার পরও মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা যানজট নিরসনের চেষ্টা করছে।