1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

খাল খননে ভেঙে পড়ল কোটি টাকার তিনটি সেতু

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২৯ মে, ২০২১

খাল খননের কারণে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের দুর্গম চরাঞ্চল চরআলগী ইউনিয়নের বোরাখালী গ্রামের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের শাখায় নির্মিত তিনটি সেতু ভেঙে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে ১০ গ্রামের মানুষ। তিনটি সেতু নির্মাণে এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছিল।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খননের কারণে নিচ থেকে মাটি সরে সেতুগুলো ভেঙে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাত বছর আগে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বোরাখালী খালের ওপর ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা হয়। আড়াই বছর আগে একই খালের ওপর ৩০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হয়। পাঁচ বছর আগে খালের আরেক স্থানে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড বোরাখালী খাল খনন শুরু করে।

সেতুগুলো ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন গ্রামবাসী। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বোরাখালী, চরহাজীপুর, বগামারা, রিকশাখালী, চরঝিনারি, টেকিরচরসহ প্রায় ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ খাল পারাপারে চরম ভোগান্তিতে পড়বে।

বোরাখালী গ্রামের আবুল বাসার জানান, গত ২৮ মে সন্ধ্যায় হঠাৎ বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে বোরাখালী খালের ওপর সাত বছর আগে নির্মিত সেতুটি। ২৫ মে রাতে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি ভেঙে পড়ে। একদিন পর পাঁচ বছর আগে নির্মিত সেতুটিও ভেঙে পড়ে। খাল খননের কারণে ভারী বৃষ্টিতে পানির ধাক্কায় মাটি সরে সেতুগুলো ভেঙে পড়েছে।

ওই গ্রামের গৃহবধূ আলেয়া বানু বলেন, সেতু থাকায় রিকশা ও ভ্যানে করে গফরগাঁওয়ে সহজে যাওয়া যেতো। দিনে দিনে কাজ সেরে বাড়ি ফিরে আসা সম্ভব হয়েছে। সেতু ভেঙে পড়ায় এখন যাতায়াতে দুর্ভোগ বেড়েছে। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।

আরেক গৃহবধূ রেখা আক্তার বলেন, এভাবে খাল খনন ঠিক হয়নি। সেতুর নিচে খনন করায় মাটি সরে ভেঙে পড়েছে। এখন কষ্ট করে খাল পার হতে হয়।

সেতুগুলো ভেঙে পড়ায় গফরগাঁও এবং হোসেনপুর উপজেলার মধ্যে যোগাযোগ অচল হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে সেতু মেরামতের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী।

চরহাজীপুর গ্রামের কৃষক আজমত আলী বলেন, সেতুগুলো নির্মাণের পর থেকে চরাঞ্চলের কৃষকরা ধান, গম, পাট ও সবজিসহ কৃষিপণ্য সহজেই গফরগাঁওসহ জেলার বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যেতে পারতেন। এতে ভালো দাম পেতেন। এখন কৃষিপণ্য পরিবহনে বিপাকে পড়বেন কৃষকরা।

সেতু ভেঙে পড়ার বিষয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে খাল খনন শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেতু নির্মাণের আগে খালটি ছিল সরু। দরপত্রের সিডিউল অনুযায়ী পাঁচ ফুট গভীরে বেইজমেন্ট করে সেতু নির্মাণ করেন ঠিাকাদার। কিন্তু সেতুর কাছে ৮-১০ ফুট গভীর করে খাল খনন করায় মাটি সরে বেইজমেন্টে ফাটল ধরে ভেঙে পড়ে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খাল খনন নিয়ম মাফিক হচ্ছে দাবি করে ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা বলেন, বোরাখালী খালে সেতু নির্মাণের আগে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতামত নেয়নি। অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণের কারণে সেতুগুলো ভেঙে পড়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি