ময়মনসিংহের ফুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিব্বির আহমেদের মৃত্যুর পর লাশ দাফনে বাধা দিয়েছে তার পাওনাদাররা। কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওই শিক্ষকের লাশ দাফনের খবর পেয়ে ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চেয়ে লাশ দাফনের বাধা দেন। একপর্যায়ে রাত ১১টায় লাশ দাফন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার দুপুরে ফুলপুর পৌরসভার সুরুজ্জমানের ছেলে শিক্ষক শিব্বির আহমেদ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। তিনি স্কুলে চাকরি দেওয়ার নামে ফুলপুরসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে কয়েকজনকে চাকরি দেন তিনি। অনেকেই তাকে লাখ লাখ টাকা দেন চাকরির প্রত্যাশায়। ২০১২ সালের পর থেকে আর কাউকে চাকরি না দিয়ে তিনি নিজ এলাকায় ও ময়মনসিংহ শহরে কোটি কোটি টাকার জমি ক্রয় করেন। হঠাৎ মারা যাওয়ায় স্ত্রী হেলেনা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন সেই টাকা ফেরত না দিয়ে পাওনাদারদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।
গত শনিবার রাতে সাহাপুর শিব্বিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পাওনাদার আলমগীর আলম ৩ লাখ টাকা, তানিয়া সুলতানা লাকী ৫ লাখ টাকা, সারোয়ার হোসেন ৬ লাখ টাকা, শামীম ৪ লাখ টাকা, বিউটি আক্তার ৬ লাখ, আব্দুস সালাম ৪ লাখ, কেফায়েত উল্লাহ ৫ লাখ, জিয়াউল হক ৩ লাখ, সামসুন্নাহার ১ লাখ, আনোয়ার ৩ লাখ, সুমন মিয়া ৩ লাখ, স্বপন মিয়া ৪০ লাখ, আরিফুল ইসলাম ৩ লাখ ৫০ হাজার, ফখরুল ইসলাম ১০ লাখ টাকা, আনোয়ার হোসেন শিবলু ৩ লাখ, হাবিবুর রহমান ও লোকমান ১১ লাখ টাকার জন্য তার বাড়িতে ভিড় করেছেন।
এদিকে পাওনাদাররা ফুলপুর থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। ফুলপুর থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী শিব্বিরকে গ্রেপ্তারও করেছিলেন। পাওনাদারদের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাসে জামিন পান তিনি।
পাওনাদারদের উদ্দেশে শিব্বিরের স্ত্রী শেফালি বেগম বলেন, আপনাদের প্রমাণসাপেক্ষে কিছু টাকা শিব্বিরের জমি বিক্রি করে পরিশোধ করব। আমার জমি ও সন্তানের জমি বিক্রি করে তা পরিশোধ করা সম্ভব না। টাকা যখন শিব্বিরকে দিয়েছিলেন তখন তো আমি ছিলাম না।