প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় সংসার করেন আসমা খাতুন (৩৬)। সেখানে প্রায় পাঁচ বছর সংসার করার পর স্বামী মারা যান। এ অবস্থায় সাবেক স্বামীকে মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতার চূড়ান্ত তালিকায় নাম তালিকাভুক্ত করেন। জানতে পেরে প্রথম স্বামী হারুন-অর রশিদ নিজেকে মৃত প্রচার করায় সাবেক স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর আজ বুধবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলাধীন পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দত্তপাড়া গ্রামের মৃত রজব আলীর ছেলে হারুন অর রশীদ আকন্দের সাথে ২০০৫ সালে একই গ্রামের তাহির উদ্দিনের মেয়ে আসমা খাতুনের বিয়ে হয়। পরে সম্পর্কের টানাপড়েনে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী গৌরীপুর উপজেলার বেতন্দর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে আসমার বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় পাঁচ বছর পর স্বামী (আব্দুর রাজ্জাক) মারা যায়। ওই সংসারে আসমার একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে।
জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ২০২০-২১ অর্থবছরের বিধবা ভাতা ভোগীদের নির্বাচিত চূড়ান্ত তালিকায় (ক্রমিক নং ৭৩) আসমা খাতুনের নাম রয়েছে। ঘটনাটি জানতে পারেন ওই মহল্লার হারুন। তিনি বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে সাবেক স্ত্রীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আসমা খাতুন জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রে সাবেক স্বামীর নাম রয়েছে তাই এ নাম ব্যবহার করেছি। জীবিতকে মৃত বানিয়েছেন কেন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এটা আমার ভুল হয়ে গেছে।
ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোতালেব বলেন, আবেদনকারীকে আমি চিনি, এ ব্যাপারে আমি কোনো মৃত্যু সনদও দেইনি। বিষয়টি জানতে পেরে পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত সমাজকর্মী আনিসুর রহমানকে আসমা খাতুনের বিধবা ভাতার বইটি বাতিল করতে বলা হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুল ইসলাম আকন্দ বলেন, পৌর সভার স্বাক্ষরিত তালিকা মোতাবেক তালিকা অনুমোদন করা হয়েছে। এখন জানতে পেরে বাতিল করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। জীবিতকে মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে ভাতা বাতিলসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।