লকডাউনের সুযোগে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কিছু জায়গা দখল করে দ্বিতল ভবন নির্মাণ শুরু করেন স্থানীয় ছাত্রলীগের এক নেতা। এ ঘটনায় সহকারী কমিশনার ভূমি কাজ বন্ধ করে দিলে ওই ছাত্রলীগ নেতা ক্ষিপ্ত হয়ে ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ভূমির সহকারী কর্মকর্তা আজিজুল হক।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই ভূমি অফিসটি হচ্ছে উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের মধুপুর বাজারে। মোট চার শতক জমির ওপর ভূমি অফিসটি। ভূমি অফিস ঘেঁষে ২০১৮ সালে দুই শতক জমি ক্রয় করেন এলাকার মো. মকবুল হোসেনের ছেলে শামীম আল নঈম। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
জানা যায়, নঈম বেশ কিছুদিন ধরে নিজের জায়গায় দ্বিতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে লকডাউনের সুযোগে তিনি নিজের জায়গার পাশেই ভূমি অফিসের বেশ কিছু জায়গা দখলে নিয়ে ভবনের সঙ্গে বর্ধিত করে ফেলেন। পরে ঘটনাটি জানতে পেরে বাধা দিলেও ওই নেতা কর্ণপাত না করে কাজ চালিয়ে যান।
ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আজিজুল হক জানান, গত রবিবার তিনি অফিসে গেলে দেখতে পান নঈম তাঁর অফিসের জায়গায় দুটি ভিম উঠিয়ে ভবনের ছাদের সঙ্গে বর্ধিত করে ঢালাই শুরু করেন। এ সময় বাধা দিলে তিনি (নঈম) কাজ বন্ধ করলেও খবর পান গভীর রাতে কাজ চালিয়ে যেতে। এ অবস্থায় ঘটনাটি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অনামিকা নজরুলকে জানালে তিনি গত সোমবার ঘটনাস্থলে এসে পুরো ভবনের কাজ বন্ধসহ সরকারি জায়গায় নির্মিত অংশ ভেঙে দেন। ঘটনাটি জানতে পেরে ছাত্রলীগ নেতা নঈম ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ঘটনায় তিনি আজ মঙ্গলবার থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা নঈম জানান, তিনি কোনো ধরনের হুমকি দেননি। সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আজিজুলকে টাকা দিয়েই নিজের ভবনের পাশে সরকারী জায়গায় দুটি সেফটিক ট্যাংকি নির্মাণ করেছিলেন। পরে আরো টাকা দাবি করলে না দেওয়ায় তিনি বিষয়টি ঘোলাটে করেছেন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে হুমকীর ঘটনায় তিনি গতকাল মঙ্গলবার ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে জায়গা দখলের সত্যতা পেয়েছেন। পরে রাত ৯টার মধ্যে জায়গা মুক্ত করার শর্তে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
থানায় জিডি হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে ওসি আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ঘটনাটি তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে।