কিশোরগঞ্জে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমণের পাগলা ঘোড়া থামছেই না। নমুনা পরীক্ষার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। একই সঙ্গে বাড়ছে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) রাতে জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্টেও একই ধারাবাহিকতা দেখা গেছে।
কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এই রিপোর্টে জেলায় নতুন করে ২৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া জেলায় নতুন করে ২৯ জন সুস্থ হয়েছেন। এই ২৪ ঘন্টায় সন্দেহজনক কোভিড-১০ কিংবা আক্রান্ত কোন মৃত্যু নেই।
জেলায় নতুন করোনা শনাক্ত হওয়া ২৯ জনের মধ্যে ১৭ জনই শনাক্ত হয়েছে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায়।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা ছাড়া অন্য ৬টি উপজেলায় বাকি ১২ জন শনাক্ত হয়েছে।
এই ১২ জনের মধ্যে করিমগঞ্জ উপজেলায় ১ জন, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ১ জন, কটিয়াদী উপজেলায় ৩ জন, ভৈরব উপজেলায় ৫ জন, নিকলী উপজেলায় ১ জন এবং বাজিতপুর উপজেলায় ১ জন শনাক্ত হয়েছে।
মোট ২৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন করে এই ২৯ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবে হাসপাতালটির প্রি-আইসোলেশনে ভর্তিকৃত জরুরী রোগীসহ মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল), বুধবার (২১ এপ্রিল) ও বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সংগৃহীত মোট ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১২ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে।
বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে বুধবার (২১ এপ্রিল) মোট ৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে।
এছাড়া কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ১১৮ জনের রেপিড এন্টিজেন টেস্টে ১৩ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে।
কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে বর্তমানে আক্রান্ত ও সন্দেহজনক মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫০ জন যাদের মধ্যে ৫ জন আইসিইউতে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ২ জন ভর্তি হয়েছেন এবং ১ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।
নতুন সুস্থ হওয়া ২৯ জনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সর্বোচ্চ ১১ জন রয়েছেন। এছাড়া বাকি ১৮ জনের মধ্যে করিমগঞ্জ উপজেলার ৩ জন, পাকুন্দিয়া উপজেলার ৩ জন, ভৈরব উপজেলার ৮ জন এবং অষ্টগ্রাম উপজেলার ৪ জন রয়েছেন। এই সময় পর্যন্ত জেলায় মোট ৪৪১৪ জন শনাক্ত, ৩৯৩০ জন সুস্থ এবং ৭৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
বর্তমানে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ৪০৯ জন। তাদের মধ্যে ৩২ জন হাসপাতাল ও ৩৭৭ জন হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।
শনাক্ত, সুস্থ ও মৃত্যু সব সূচকেই জেলার মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা শীর্ষে রয়েছে। এরপরেই রয়েছে ভৈরব উপজেলা।
বর্তমানে করোনা আক্রান্ত মোট ৪০৯ জনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ১৯৫, হোসেনপুর উপজেলায় ১৫ জন, করিমগঞ্জ উপজেলায় ৮ জন, তাড়াইল উপজেলায় ৭ জন, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ২৯ জন, কটিয়াদী উপজেলায় ৩২ জন, কুলিয়ারচর উপজেলায় ১৭ জন, ভৈরব উপজেলায় ৬০ জন, নিকলী উপজেলায় ৪ জন, বাজিতপুর উপজেলায় ২৪ জন, ইটনা উপজেলায় ১ জন, মিঠামইন উপজেলায় ১৩ জন এবং অষ্টগ্রাম উপজেলায় ৪ জন রয়েছেন।
এদিকে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) পর্যন্ত মোট ৭৬ হাজার ১৪১ জন প্রথম ডোজ এবং গত ৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ২৭ হাজার ৮৪১ জন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় ১৯৩ জন প্রথম ডোজ এবং ২ হাজার ২৭৯ জন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন।