মহামারি করোনাভাইরাস নিম্ন-আয়ের পেশাগুলোকে চরম অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। তছনছ করেছে মানুষের জীবন। অর্থনৈতিক দৈন্য শ্রমজীবীদের বাঁচার স্বপ্নকে ক্রমেই ম্লান করে দিচ্ছে। সমাজের অপরিহার্য প্রান্তিক একটি পেশা মুচি। ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌর শহরে ১৫-২০ জন মুচি রয়েছেন। রেলওয়ে স্টেশন, জামতলা মোড়সহ শহরের বিভিন্ন স্ট্যান্ডে আগত যাত্রীদের জুতা পালিশ ও মেরামত করে তাদের জীবিকা নির্বাহ হয়। কিন্তু মহামারি করোনার অভিঘাত তাদের জীবিকার পথ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে।
করোনার কারণে ট্রেন না চলায় স্টেশনে যাত্রীদের যাতায়াত নেই। স্ট্যান্ডগুলোতে লকডাউনের মধ্যেও কিছু যানবাহনের আনাগোনা থাকলেও যাত্রী খুবই কম। তাই মুচিদের আয়-রোজগার প্রায় নেই বললেই চলে। এ অবস্থায়ও তারা প্রতিদিনের মতো আয়-রোজগারের আশায় দোকান নিয়ে বসেন।
গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের দুই নম্বর গেটে পাশাপাশি তিনটি মুচির দোকান দেখা যায়। তবে ট্রেন বন্ধ থাকায় স্টেশনে কোনো যাত্রী নেই। কথা হয় মুচি কৃষ্ণ চন্দ্রের সঙ্গে। তাদের ১১ জনের যৌথ সংসার। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা উপার্জন করতে পারেন। কিন্তু এখন মাঝেমধ্যে বাজারের লোকজন এলে সারা দিনে ৫০-১০০ টাকা উপার্জন করতে পারেন। তা দিয়ে শুধু হাতখরচ চলে। সংসার চলে কৃষ্ণ চন্দ্রের ভাইদের সহযোগিতায়।
পাশে বসা রংলাল মুচি বলেন, কী করব ভাই, অন্য কাজ তো পারি না। তাই আশায় আশায় বসে থাকি। যদি কিছু আয়-রোজগার হয়। সব মানুষের তো একই অবস্থা। যে অবস্থা মানুষ বাঁচব কিভাবে!
স্থানীয় আলতাফ গোলন্দাজ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক গোলাম মোহাম্মদ ফারুকী বলেন, মহামারি করোনা প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষকেই হতাশাগ্রস্ত করেছে। তবে প্রান্তিক পেশাগুলোর বেশি ক্ষতি হয়েছে।