ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় নিখোঁজের তিন মাস ২২ দিন পর সালমা সুলতানা (২৭) নামের এক তরুণীর অর্ধগলিত মরদেহ টয়লেট থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মোতালেব কাজি (৩৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রোববার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের পলাশতলী গ্রামের একটি ভাঙা টয়লেট থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সালমা সুলতানা উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের কচুয়ারপাড় এলাকার নবীতুল্লাহর মেয়ে। তিনি বিএ পাস করে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন। গ্রেফতার মোতালেব কাজি একই গ্রামের হাবেজ আলী কাজীর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ। তিনি বলেন, গ্রেফতার মোতালেব কাজি পুলিশের হেফাজতে আছেন। সোমবার (১৯ এপ্রিল) তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
এর আগে শনিবার (১৭ এপ্রিল) মোতালেব কাজিকে উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের পলাশতলী গ্রামের তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অর্ধগলিত অবস্থায় সালমা সুলতানা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২৫ জানুয়ারি সালমা সুলতানা নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় তার ভাই গত ১ ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়িয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ নিহতের মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করে খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করে। তবে, মোতালেব কাজি ভুয়া এনআইডি দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করার কারণে শনাক্ত করতে সময় লাগছিল। সম্প্রতি মোতালেব কাজি তার নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম মোবাইলে ব্যবহার করা শুরু করেন। তার সূত্র ধরেই মোতালেব কাজিকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
সালমা সুলতানা বিএ পাস করে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন। সেই সুবাধে মোতালেব কাজির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৫ জানুযারি সালমাকে বিয়ে করবেন বলে নগরীতে ডেকে নিয়ে আসেন মোতালেব কাজি। সেখানে একটি হোটেলে খাওয়া-দাওয়া শেষে সালমা বিয়ের জন্য চাপ দেন। মোতালেব কাজি কৌশলে তাকে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে সারাদিন শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে রাতের বেলায় নিয়ে যান পলাশতলী গ্রামে। সেখানে নির্জন জায়গায় নিয়ে গলাটিপে হত্যা করে পুকুরপাড়ের ভাঙা একটি টয়লেটে গর্ত করে পুঁতে রাখেন। পরে সেখান থেকে সটকে পড়েন। ব্যক্তি জীবনে মোতালেব কাজি বিবাহিত বলেও জানায় পুলিশ।