কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২২ জন এবার ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে। তাদের এ সাফল্যে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত এসভির স্বনামধন্য প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ কবীরসহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
জানা গেছে, এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করে অন্যান্য সহপাঠীর মতো বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হন এই ২২ শিক্ষার্থী। ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তারা অংশ নেন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায়।
এই ২২ শিক্ষার্থী হলেন- নোসাইবা হোসেন সাবা, সুলতানা আক্তার সাদিয়া, আরফাতুন নাহার সুমাইয়া, নওশীন তাবাসসুম ইসলাম, নিশাত নাবিলা, সাদিয়া হক, সিনথিয়া বিনতে মান্নান, অমৃতি অরাত্রিকা, নিভৃতি দ্যোতনা, সায়মা আক্তার, শেফা উম্মে সালমা সুস্মিতা, তাজরিয়ান রাফিন মাহি, ফারহানা আক্তার বাঁধন, আসমা সিদ্দিকা অংকন, নূসরাত আরা নিদ্রা, উম্মে হাবিবা অন্তু, অনন্যা সাহা, আনিকা তাসনিম অনি, রেজওয়ানা আফরিন ইকরা, নওশীন তাবাসসুম মৌনতা, তাসফিয়া নওশীন এবং আনজুমান আরা শাম্মী।
তাদের মধ্যে ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে নোসাইবা হোসেন সাবা, সুলতানা আক্তার সাদিয়া, আরফাতুন নাহার সুমাইয়া ও তাসফিয়া নওশীন; ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নিশাত নাবিলা ও সাদিয়া হক এবং কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন নওশীন তাবাসসুম ইসলাম ।
সিনথিয়া বিনতে মান্নান, অমৃতি অরাত্রিকা ও রেজওয়ানা আফরিন ইকরা সিলেটের এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। বগুড়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন নিভৃতি দ্যোতনা। খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন সায়মা আক্তার ও নওশীন তাবাসসুম মৌনতা।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন, শেফা উম্মে সালমা সুস্মিতা, ফারহানা আক্তার বাঁধন ও আনিকা তাসনিম অনি। রংপুর মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন, তাজরিয়ান রাফিন মাহি, অনন্যা সাহা ও আনজুমান আরা শাম্মী। আসমা সিদ্দিকা অংকন ও নূসরাত আরা নিদ্রা বরিশালের শেরে বাংলা একে ফজলুল হক মেডিকেল কলেজ এবং উম্মে হাবিবা অন্তু নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।
মেয়েদের এমন সাফল্যে আনন্দে উদ্বেলিত কিশোরগঞ্জ এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি মেয়েদের এমনভাবে গঠন করতে যাতে এখান থেকে বের হওয়ার পর তারা নিজেদের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে পারে। তাদের এই অর্জনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। শিক্ষক হিসেবে আমরা গর্বিত।’
তিনি জানান, মেডিকেল পরীক্ষার রেজাল্ট হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ফোন করে যে তথ্য দিয়েছে, সে অনুযায়ী ২২ জন বিভিন্ন মেডিকেল ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এ সংখ্যা বাড়তে পারে। মেডিকেল ছাড়াও এ বছর দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের সঙ্গে ভর্তির সুযোগ পাবে বলেও আশা করেন তিনি।
কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বরাবরই এসএসসি পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করে আসছে। প্রতি বছর শতভাগ পাস ছাড়াও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে জেলায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে তারা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীর ২০১৯ সালে দেশের সেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন। এছাড়া গত মাসে শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় পেয়েছেন প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা।
২০১৮ সালে এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া ২৩৩ জন শিক্ষার্থীর ১৯৩ জন-ই জিপিএ ৫ পেয়েছিল।