সিনেমা জগতে এক সময়ের নামকরা বারী স্টুডিওটি এখন মসজিদে পরিণত হয়েছে। স্টুডিওতে আগে যিনি কাজ করতেন সেই আবুল হাসেমও হয়েছেন মসজিদের খাদেম।
সেখানে প্রতিবেদকের সঙ্গে ৫২ বছর বয়সী আবুল হাসেমের কথা হয়।
তিনি জানান, ১৯৮৮ সাল থেকে বারি স্টুডিওতে কাজ শুরু করেছিলেন। এরপর ফখরুদ্দীন, তত্ত্বাধায়ক সরকারের আমলে গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে চলে যান। মসজিদ তৈরির আগে তিনি আবারও স্টুডিওতে এসে কাজে যোগ দেন। এখন এই মসজিদেরই খাদেম হিসেবে কাজ করছেন আবুল হাসেম।
এখানে সিনেমার শুটিং, ডাবিং এবং সম্পাদনার কাজ চলতো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিই তো আগে বারি স্টুডিওতে কাজ করতাম। এখন মসজিদের খাদেম হয়েছি।’
চলচ্চিত্রের বিখ্যাত স্টুডিও হিসেবে পরিচিত বারী স্টুডিওটি ছিল রাজধানীর তেজগাঁও ও কারওয়ান বাজারের মাঝামাঝি পূর্ব তেজতুরীবাজার (তেজগাঁও মহিলা কলেজ) গলির মাথায় চৌরঙ্গী মোড়ে এলাকায়, যা এখন মসজিদ করা হয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে মসজিদুল বারী–তা’য়ালা।
মসজিদটির খতিব ইস্ট লন্ডন জামে মসজিদের সাবেক ইমাম ও বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ইসলামি আলোচক মুহাম্মদ বিলাল হুসাইন। এখানে এখন মোয়াজ্জেম ও আরবি শিক্ষকসহ ছয়জন রয়েছেন।
সবার খরচ বহন করেন এম এ বারীর বড় ছেলে ইসমাইল হোসেন মাসুদ। নিজ খরচে মাসুদ মসজিদটি গড়ে তুলেছেন।
খাদেম আবুল হাসেম বলেন, ‘২০০৬ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্র ও নাটকের কাজ হয়েছে এই স্টুডিওতে। তারপর বন্ধ করে দেয়া হয় এটি। এরপর এটিকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়।’
১৯৭০ সালে স্টুডিওটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী এম এ বারী। তখন এটি ঢাকার দ্বিতীয় বেসরকারি স্টুডিও ছিল। ষাট থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত এখানে প্রায় পাঁচশ সিনেমার কাজ হয়েছে।
ষাটের দশকের শুরুতে মগবাজার এলাকায় ইস্টার্ন থিয়েটার নামে একটি স্টুডিও স্থাপন করেছিলেন এম এ বারী। ১৯৬৮ সালের দিকে সরকারি নির্দেশে স্টুডিওটি বন্ধ হয়ে গেলে বারী স্টুডিও নির্মাণ করা হয়।