1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯ অপরাহ্ন

অসহনীয় যানজটে নাকাল ময়মনসিংহ নগরবাসী

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২১

ময়মনসিংহ নগরবাসী সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অসহনীয় যানজটে নাকাল। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কে প্রতিনিয়ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে সিটি কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের কোনো উদ্যোগ নেই। বিভাগীয় শহরটি বর্তমানে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগসহ নাগরিক সমাজের নেতারা মনে করেন, অপ্রশস্ত সড়ক ও অনিয়ন্ত্রিত অটোরিকশাই যানজটের কারণ।

দু’শ বছরের পুরোনো শহর ময়মনসিংহে বর্তমানে মানুষ বেড়েছে কয়েক গুণ। একদিকে অপ্রশস্ত সড়ক ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত অনিয়ন্ত্রিত রিকশা-অটোরিকশা, অন্যদিকে নগরীর ভেতর দিয়ে প্রতিদিন ৫৮টি ট্রেন চলাচলের জন্য ছয়টি রেলক্রসিংয়ে কয়েক ঘণ্টা আটকা থাকে যানবাহন।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশ (সিবিএমসিবি), নটর ডেম কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, আনন্দমোহন কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বড় বড় শতাধিক বাস শহরের অপ্রশস্ত রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। এছাড়া শহরের মাঝখানে নগরীর পুরাতন ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন শতাধিক বাস ও লেগুনা এবং দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটের বাস-ট্রাক প্রধান সড়ক জুবলিঘাট-থানাঘাট দিয়ে চলাচল করায় এসব সড়কে যানজট এখন নিত্যসঙ্গী।

এক সময় দিনের বেলায় শহরে ট্রাক প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও এখন তা মানা হচ্ছে না। ফলে নগরীর অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র বড়বাজার ও ছোটবাজারের পুরো রাস্তাটি এখন ট্রাক-পিকআপ স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। ফলে যানজট আরও তীব্র হচ্ছে। ফলে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত টাউন হল মোড় থেকে প্রধান ৩টি সড়ক দীর্ঘ যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে। ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা।

নগরবাসী জানান, বিভিন্ন সড়কে যাত্রীর চেয়ে রিকশা ও ইজিবাইকের সংখ্যা বেশি থাকায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত লাল ও সবুজ রঙে চিহ্নিত ইজিবাইকগুলো জোড় ও বিজোড় সংখ্যায় ভাগ হয়ে একদিন পরপর পর্যায়ক্রমে চলাচল করার নিয়ম, অথচ চালকরা প্রতিদিন চালাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ রাতারাতি ইজিবাইকের রং বদলে ভুয়া নম্বর ব্যবহার করে প্রতিদিন চালাচ্ছেন। এ কারণে নগরীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, কম্পিউটারাইজড ইন্টারলকিং সিস্টেমে প্রতিটি ট্রেন যাওয়ার সময় কমপক্ষে তিনটি লেভেল ক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার বন্ধ না করলে ট্রেনের লাইন ক্লিয়ার পাওয়া যায় না। সঙ্গত কারণে একটু আগেই লেভেলক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার দিয়ে রাস্তা বন্ধ করা হয়। এসব লেভেলক্রসিংয়ে ৭ থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এতে ৫৮টি ট্রেনে গড়ে ১০ মিনিট করে হলেও প্রতিদিন সর্বমোট ৯ ঘণ্টা লেভেলক্রসিংয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় ৫০ কিমি. সড়ক রয়েছে। বর্তমানে নগরীতে ১২ হাজার রিকশা ও সাত হাজার অটোবাইক, কয়েকশ’ কার ও মাইক্রোবাস চলাচল করছে।

সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু জানান, আমরা যানজট নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য শহর উপহার দিতে জনস্বার্থে সওজের রাস্তাগুলো চার লেন করে নির্মাণ এবং নগরীর ভেতর থেকে রেললাইন স্থানান্তর করা এখন সময়ের দাবি। সব ধরনের উন্নয়নমূলক কাজে নগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। সিটি মেয়র জানান, নগরীর সওজের রাস্তাসমূহ বিদ্যমান ২২ ফুট থেকে ৪০ ফুটের অধিক প্রশস্তকরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আমীন কালাম জানান, ইদানীং তীব্র যানজটে মানুষ অতিষ্ঠ। অপ্রশস্ত সড়কে যানজট এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। অবিলম্বে শহরের সড়কগুলো প্রশস্ত করা না করা হলে ভবিষ্যতে এই নগরী অচল হয়ে পড়বে।

জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানান, নগরীর যানজট নিরসনে সওজের রাস্তাগুলো প্রশস্তকরণের বিকল্প নেই। এখনই উদ্যোগ না নিলে আগামী দিনে নগরবাসীকে আরও কঠিন দুর্ভোগ পোহাতে হবে। এছাড়া নগরীর পাটগুদাম মোড় বাসস্ট্যান্ড, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড ও টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড সরানোসহ ট্রাফিক মোড়গুলো প্রশস্ত করে ইন্টারসেকশন তৈরি করা বিশেষ প্রয়োজন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি