ট্রেনের এক যাত্রীর মুখে কালি। তা দেখে আরেকজন হাসছেন। নিজের মুখেও কালির লেপন আছে, কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারলেন। পড়লেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে মাঝপথেই ট্রেন থেকে নামার চিন্তা তাদের। কিন্তু যাত্রীদের মুখে এভাবে কালি এলো কীভাবে?
ট্রেনের লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) থেকে বের হওয়া ধোঁয়া থেকে এমনটি হয়েছে। যেন এই ধোঁয়ায় ‘ভূত’ সাজতে হলো যাত্রীদের। গত রবিবার রাতে ঢাকা থেকে নোয়াখালীগামী নোয়াখালী এক্সপ্রেস (১২ ডাউন) ট্রেনে এই ঘটনা ঘটে।
এক-দুজন যাত্রী নয়, ইঞ্জিনের ধোঁয়ায় কয়েক শ যাত্রীর মুখমণ্ডলসহ সারা শরীর কালো হয়ে যায়। এর মধ্যে ১০ জনের মতো যাত্রীর মুখমণ্ডল এত কালো হয় যে, দেখতে ভূতের মতোই লাগে। অনেক যাত্রীর ছবিও ধারণ করতে দেখা যায়। অতিরিক্ত ধোঁয়ার কারণে অনেকেরই শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ট্রেনের লোকোমাস্টার (চালক) মো. হাবিবুল্লাহ খান। তিনি জানান, ইঞ্জিন থেকে অতিরিক্ত ধোঁয়া বের হয়েই এমন হয়।
রেলওয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ট্রেনটি যে ইঞ্জিন নিয়ে চলাচল করে, সেটি ৪০ বছরের বেশি পুরনো। যে কারণে এতে দীর্ঘদিন ধরেই ত্রুটি বিরাজ করছে। মূলত ইঞ্জিনের ইনজেকটরে মুখ বড় হয়ে গেলে তেল মিসইউজ হয়ে ধোঁয়ার সঙ্গে বের হয়। নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনেও এ ধরনের কিছু একটা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরেকটি সূত্র বলেছে, ঢাকা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ ট্রেনটি আসতে ৪৫ গ্যালন ইঞ্জিন তেলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ত্রুটি থাকায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি আখাউড়া পর্যন্ত আসতে ৮০ গ্যালনের মতো তেল লাগে। একইভাবে আখাউড়া থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত যেতেও অতিরিক্ত তেলের প্রয়োজন হয়। দীর্ঘদিন ধরেই ইঞ্জিনটিতে সমস্যা বিরাজ করছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের লিখিতভাবে জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।