গত প্রায় ২৪টি বছর ধরে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও নেতাকর্মীদের কাছে গিয়ে ভাগ্যে জুটেনি বয়স্ক বা বিধবা ভাতার সুবিধা। আর তা মাত্র ২৫ মিনিটেই সম্ভব করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। রবিবার এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইলে। বইসহ সকল ধরনের ব্যবস্থা করে গত জুলাই থেকেই পাওনা টাকার ব্যবস্থা করেছেন তিনি।
জানা যায়, ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে প্রথম বয়স্ক ভাতা চালু হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার ৯ নম্বর আচারগাঁও ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আব্দুল কদ্দুসের স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন (৮৩)। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে অন্যের জায়গায় বসবাস করছেন। ভাগ্যে জুটেনি সরকারের কোনো ধরনের সহায়তা। এ নিয়ে এলাকার মাসুদ রানা নামে এক যুবক নিজের ফেসবুক আইডিতে ওই বৃদ্ধার অসহায়ত্ব নিয়ে ভিডিও পোস্ট করেন। আর এ ঘটনা চোখে পড়ে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদ উদ্দিনের। তিনি যুবক মাসুদ রানার আইডির পোস্টে মন্তব্য করে ওই বৃদ্ধাকে নিজের দপ্তরে নিয়ে আসার জন্য বলেন। পরে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে ডেকে এনে বৃদ্ধা মনোয়ারার বয়স্ক অথবা বিধবা ভাতার দ্রুত ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। আর সকল কাগজপত্র জমা দেওয়ার প্রায় ২৫ মিনিটের মধ্যেই বৃদ্ধা মনোয়ার নামে একটি বয়স্ক ভাতার বই হয়ে যায়। এ ঘটনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান বৃদ্ধা ও তাঁর একমাত্র মেয়ে।
মনোয়ারা বলেন, ‘তাইনেরা (চেয়ারম্যান, মেম্বার) অতোদিন কেরে দিতারছে না। আমি কি পাওয়ার যোগ্য আছলাম না?’ বৃদ্ধার সাথে আসা এক মাত্র মেয়ে সাহেরা খাতুন বলেন, ‘নিজের জীবনের অর্ধেকটাই মায়ার বইয়ের লাইগ্যা চেয়ারম্যান মেম্বাররার কাছে ঘুরছি। প্রয়োজনীয় টেহা দিতাম পারছি না দেইখ্যা কিছুই অইছে না। অহন তো নিমিষেই অইয়া গেছে। বইটি বৃদ্ধার হাদে বুঝিয়ে দেওয়ার সময় ইউএনওর ত্রাণ তহবিল থেকে নগদ প্রায় ৩ হাজার ৩ শ টাকা ও প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী দেন।
ইউএনও এরশাদ উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছিলাম। কোনো উত্তর দিতে পারেন নাই। এটাও এক ধরনের দুর্নীতি। ইউএনও এরশাদ উদ্দিন আরো বলেন, ওই বৃদ্ধাকে ঘরের ব্যবস্থাও করে দেবেন।
সমাজসেবা কর্মকর্তা ইনসান আলী বলেন, আমার কাছে আগে এলেই ব্যবস্থা করা যেত। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে গত জুলাই থেকেই পাওনাসহ টাকাটা দিয়ে দিতে।